আমার বাংলা বই

প্রশ্ন উত্তর

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।

১।  ‘বোবা জল’ বলতে কী বোঝায়?

'বোবা জল’ বলতে ডিস্টিল ওয়াটারকে বোঝায়। একে পরিশ্রুত জলও বলা হয়। এ ধরনের জলে কোনো স্বাদ থাকে না বলে বোবা জল বলা হয়েছে।

২।  ‘জলাতঙ্ক’ কাকে বলে?

জলাতঙ্ককে ইংরেজিতে বলে হাইড্রোফোবিয়া। এ রোগে আক্রান্ত মানুষ জল খেতে পারে না, এমনকি জল দেখলেই ভয় পায়। সাধারণত কুকুরে কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগ হয়। কুকুরের জিহ্বায় যে বিষাক্ত লালা থাকে তা মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে এ রোগের সৃষ্টি হয়।

৩।  জলের তেষ্টায় পথিকের মন ও শরীরের অবস্থা কী হয়েছিল? ব্যাখ্যা কর।

জলের তেষ্টায় পথিকের মন ও শরীরের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছিল। ভর দুপুরে দীর্ঘ পথ চলার পর পথিকের ভীষণ তৃষ্ণা পেল। পথিক তাই বিভিন্নভাবে নানাজনের কাছে জল চাইতে লাগল। কিন্তু কেউ তার কথা বুঝতে চাইল না। পিপাসা আর ক্লান্তিতে তাই পথিক নাজেহাল হয়ে পড়ল।

৪।  মনে কর এই পথিকের সঙ্গে তুমি কথা বলছ। তোমাদের দুজনের কথোপকথন কেমন হতে পারে তা নিজের ভাষায় লেখ।

‘অবাক জলপান’ নাটিকার পথিকের সঙ্গে আমার যেরকম কথোপকথন হতে পারত তা হলো:
পথিকঃ খোকা, ভীষণ তেষ্টা পেয়েছে। একটু জল আনে দেবে।
আমিঃ অবশ্যই চাচা, পাশেই আমার বাড়ি। আপনি অখানে চলুন, পানি পান করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেবেন।
পথিকঃ ঠিক আছে খোকা, তোমাকে ধন্যবাদ।

৫।  পথিককে ঝুড়িওয়ালা কত রকম জলের কথা শুনিয়েছিল? নামগুলো লেখ।

পথিককে ঝুড়িওয়ালা পাঁচ রকম জলের কথা শুনিয়েছিল। এগুলো হলো কুয়োর জল, নদীর জল, পুকুরের জল, কলের জল ও মামাবাড়ির জল।

৬।  তুমি তোমার সহপাঠীর সাথে আলোচনা করে ইচ্ছেমতো একটি নাটিকা লেখ।

আমি দেবাশিষ মজুমদার। আমার সহপাঠী বন্ধু লিটনের সাথে আলােচনা করে একটি নাটিকা লিখেছি। এটি নিম্নরূপ:
প্রথম দৃশ্য
[বির্ষাকাল। রাবুদের পুকুর পাড়ের বড় আম গাছটার নিচে কুশল ও হিমেল কথা বলতে বলতে যাচ্ছে।]
হিমেল : তপুটাকে এত করে বললাম তবুও এল না। সারাক্ষণ বই নিয়ে পড়ে থাকে।
কুশল : ও তো সবসময়ই ফাস্ট হয়। তাহলে এত পড়ার দরকার কী?
হিমেল ; তুই বুঝবি না। তুই তো ঠিকমতো ক্লাসেই যাস না।
কুশল : এত বড় বড় বই পড়তে কার ভালো লাগে বল?
হিমেল : কুশল, দেখ সামনের ঝোপটার ধারে কী যেন পড়ে আছে। চল, গিয়ে দেখি।
কুশল : আরে এটা তো একটা পাখি! ওকে নিয়ে খুব মজা করা যাবে। চল সবাইকে দেখাই।
দ্বিতীয় দৃশ্য
[কয়েকজন ছোট ছোট ছেলেমেয়ে জড়ো হয়ে কথা বলছে।]
হিমেল : তোরা যাই বলিস, পাখিটাকে আমিই প্রথম দেখেছি, তাই এটা আমার।
কুশল : এটা কেমন কথা! পাখিটাকে আমরা দুজন মিলে পেয়েছি। তাই দুজন মিলে ঠিক করব এটা নিয়ে কী করব।
শিমু : তোরা শুধু শুধু তর্ক করছিস কেন? দেখেছিস পাখিটা কী সুন্দর! কেমন মায়া নিয়ে তাকাচ্ছে! বেচারা বৃষ্টিতে ভিজে একেবারে চুপসে গেছে। ঠাণ্ডায় থরো থরো কাপছে।
ছোটন : এটাকে নিয়ে আমরা কী করব?
হিমেল : কী করব মানে! এটাকে আমি বাড়ি নিয়ে গিয়ে খাঁচায় পুরে রাখব।
শিমু : চুপ কর! তোর কি মায়া দয়া নেই? বেচারা সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না পর্যন্ত। তার চেয়ে ওকে আমার সাথে নিয়ে যাই। সুস্থ হলে কী করা যায় ভেবে দেখব।
হিমেল : ঠিক আছে নিয়ে যা। কিন্তু সাবধানে রাখবি।
কুশল : হিমেল, চল আমরা ওর জন্য খাবার নিয়ে আসি।
তৃতীয় দৃশ্য।
[শিমুদের বাড়িতে ছেলেমেয়েদের সভা বসেছে।]
রাবু : পাখিটাকে আগে নিয়ে আয় দেখি।
শিমু : পাখিটা ভালো আছে। ওঘরে খাবার খাচ্ছে।
হিমেল : তাহলে কথা শেষ। এটাকে আমি নিয়ে যাচ্ছি।
শিমু : কিন্তু ওকে আমি সুস্থ করে তুলেছি। তাই এটা আমার।
কুশল : তুই এটাকে নিয়ে কী করবি?
শিমু : আকাশে উড়িয়ে দেবো।
হিমেল : কী বলছিস? আকাশে উড়িয়ে দিবি! পাগল না কি!
কুশল : জানিস, একটা পাখি পেতে হলে কত কী করতে হয়!
ছোটন : আমার মনে হয় শিমু ঠিক কথা বলছে। তাছাড়া খাঁচায় আটকে রাখলে তো পাখিটা উড়তে পারবে না। রাৰু : তুই ঠিক বলেছিস। পাখিকে উড়তে দেখতেই ভালো লাগে।
[শিমুর ছোট ভাই পিয়ালের প্রবেশ]
পিয়াল : তোমরা পাখিটাকে আটকে রেখেছ কেন? ওর বাবা-মা কাদবে তো।
হিমেল : আমারও মনে হচ্ছে পাখিটাকে ছেড়ে দেওয়াই উচিত হবে।
কুশল : তোরা সবাই যখন বলছিস তখন আমারও আপত্তি নেই। চল, সবাই মিলে পাখিটাকে মুক্ত করে দিই।

৭।  জলাতঙ্ক রোগ কী? এ রোগের লক্ষণ কী?

পাগলা কুকুর জলাতঙ্ক রোগের জীবাণু বহন করে বলে পাগলা কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগ হয়। এ রোগ হলে রোগীর প্রচণ্ড জল পিপাসা পায়।

৮।  ঝুড়িওয়ালা পথিকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছে কেন?

তৃষ্ণার্ত পথিক ঝুড়িওয়ালার কাছে জলের কথা জিজ্ঞাসা করলে সে ভাবে পথিক বুঝি জলপাই চাচ্ছে। কিন্তু পথিক যখন তাকে বলেন যে তিনি জলপাই নয়, জল চাচ্ছেন তখন একথা শুনে ঝুড়িওয়ালা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।

৯।  ‘আপনার সঙ্গে কথা বলাই আমার অন্যায় হয়েছে’-কে, কেন একথা বলেছে?

তৃষ্ণার্ত পথিক ঝুড়িওয়ালার কাছে জলের সন্ধান জানতে চাইলে ঝুড়িওয়ালা তার কথার ভিন্ন অর্থ বুঝে রেগে গিয়ে পথিককে নানা কথা বলতে থাকে। তার কথা শুনে পথিক এ কথাটি বলেছেন।

১০।  পথিক কী সমস্যায় পড়েছে?

তৃষ্ণার্ত এক পথিক ঝুড়িওয়ালার কাছে জল চেয়ে বিপদে পড়েছে। কেননা ঝুড়িওয়ালা তার কথা না বুঝে তাকে অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছে

অল্প কথায় উত্তর দেই।

১।  কার জলাতঙ্ক হয়েছে?

বদ্যিনাথের জলাতঙ্ক হয়েছে।

২।  নাটিকা কাকে বলে?

ছোট নাটককে নাটিকা বলে।

৩।  ঝুড়িওয়ালার ঝুড়িতে কী ছিল?

ঝুড়িওয়ালার ঝুড়িতে আম ছিল।

৪।  পথিক ‘জল’ চাইলে ঝুড়িওয়ালা ‘জলপাই’ শুনেছিল কেন?

পথিক ‘জল’ চাইলে ঝুড়িওয়ালা ‘জলপাই’ শুনেছিল কারণ সে ভুল বুঝেছিল বলে।

৫।  ‘অবাক জলপান’ নাটকের লেখকের কয়েকটি সৃষ্টির নাম লিখ।

‘আবোল-তাবোল’, ‘হ-জ-ব-র-ল’, ‘পাগলা দাশু’, ‘বহুরূপী’, ‘খাইখাই’, ‘অবাক জলপান’ তাঁর অমর সৃষ্টি।

৬।  লেখকের পিতা ও পুত্রের পরিচয় লিখ।

লেখক সুকুমার রায়ের পিতা ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী ও পুত্র সত্যজিৎ রায়।