আমার বাংলা বই

প্রশ্ন উত্তর

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।

১।  ‘তিতুমীর’ নামটি কেমন করে হলো? তাঁর প্রকৃত নাম কী?

শিশুকালে তিতুমীর একবার কঠিন অসুখে পড়েন। রোগ সারানোর জন্য তাঁকে ভীষণ তেতো ঔষধ খেতে দোয়া হয়। কিন্তু তিনি বেশ খুশিতেই সেই তেতো ঔষধ খান। তখন সবাই অবাক হয়ে তাঁর ডাক নাম রাখেন তেতো। তেতো থেকে তিতু। তার সঙ্গে মীর লাগিয়ে হলো তিতুমীর। তাঁর প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী।

২।  এ দেশকে ইংরেজদের হাত থেকে মুক্ত করার চিন্তা কেন তাঁর মনে এলো?

তখন ভারতবর্ষ ছিল ইংরেজদের অধীন। তারা স্থানীয় লোকদের ওপর ভীষণ অত্যাচার চালাত। ইংরেজ কর্মচারীরা ঘোড়া ছুটিয়ে চলত দারুণ দাপটে। এসব দেখে এদেশকে ইংরেজদের হাত থেকে মুক্ত করার চিন্তা এলো তিতুমীরের মনে।

৩।  হিন্দু-মুসলমান সবাইকে তিনি কী বলে একতাবদ্ধ করতে চাইলেন?

তিতুমীর মুসলমানদের সত্যিকার মুসলমান হতে আহ্বান জানালেন। আর হিন্দুদের বললেন অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। এসব কথা বলে তিতুমীর হিন্দু-মুসলমান সবাইকে একতাবদ্ধ করতে চাইলেন।

৪।  ইংরেজদের পাশাপাশি কারা এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার চালাত?

ইংরেজদের পাশাপাশি দেশী জমিদাররা এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার চালাত।

৫।  নারকেলবাড়িয়া কোথায়? এখানে তিতুমীর কী তৈরি করলেন?

নারকেলবাড়িয়া বারাসাতে অবস্থিত। এখানে তিতুমির ‘বাঁশের কেল্লা’ তৈরি করলেন।

৬।  কত খ্রিষ্টাব্দে তিতুমীরের কাছে ব্রিটিশ শক্তি পরাজিত হয়?

১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে তিতুমীরের কাছে ব্রিটিশ শক্তি পরাজিত হয়।

৭।  কখন কোন ইংরেজ সেনাপতির নেতৃত্বে তিতুমীরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়?

১৮৩১ সালে ১৯শে নভেম্বর ইংরেজ সেনাপতির কর্নেল স্টুয়ার্ডের নেতৃত্বে তিতুমীরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়।

৮।  তিতুমীর কীভাবে শহিদ হলেন?

কর্নেল স্টুয়ার্ডের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ বাহিনী তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে। প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। কিন্তু কিছুক্ষেণের মধ্যেই ইংরেজদের গোলার আঘাতে ছারখার হয়ে যায়। নারকেলবারিয়ার বাঁশের কেল্লা। শহিদ হন বীর তিতুমীর।

৯।  পরাধীন ভারতবর্ষে ইংরেজ বিরোধী স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম শহিদ কে?

পরাধীন ভারতবর্ষে ইংরেজ বিরোধী স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম শহিদ হলেন বীর তিতুমীর।

১০।  শহিদ তিতুমীর কেন অমর হয়ে আছেন?

তিতুমীর দেশকে ভালবাসতেন। তাঁর মনে ছিল পরাধীন দেশকে স্বাধীন করারর চিন্তা। এজন্য শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। এরকম দেশপ্রেমের জন্যই শহিদ তিতুমীর আমর হয়ে আছেন।

১১।  তিতুমীরের স্বভাব কেমন ছিল?

তিতুমীর সৈয়দ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই ছিলেন ভীষণ জেদি ও ডানপিটে স্বভাবের। তিনি ছোটবেলা থকেই দেশকে ব্রিটিশদের শাসন-শোষণ থেকে মুক্ত করার চিন্তা করতেন। প্রচণ্ড শারীরিক শক্তিধর তিতুমীর মুষ্টিযুদ্ধ, লাঠিখেলা, অসিচালনা প্রভৃতিতে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য তিনি হিন্দু-মুসলিম উভয় মানুষের একাত্ম করার চেষ্টা করেন।

১২।  তিতুমীর বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন কেন?

তিতুমীর পরাধীন দেশকে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন। এ লক্ষ্যে তিনি হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বারাসাতের নারকেলবারিয়ায় এক দুর্ভেদ্য বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন।

১৩।  তিতুমীর কীভাবে নীল কুঠি দখল করে?

১৮৩০ সালে ম্যাজিস্ট্রেট আলেকজান্ডারকে পাঠানো হয় তিতুমীরকে দমন করবার জন্য। কিন্তু আলেকজান্ডার তাঁর সিপাহি বাহিনী নিয়ে পরাস্ত হন তিতুমীরের হাতে। তারপর তিতুমীর কয়েকটি নীলকুঠি দখল করে নেন।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

১।  তিতুমীরের কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেন?

তিতুমীরের ১৭৮২ সালে সৈয়দ বংশে জন্মগ্রহণ করেন।

২।  তিতুমীর শিশুকালে কেমন ছিলেন?

তিতুমীর শিশুকালে ভীষণ জেদি ছিলেন।

৩।  তিতুমীর কার প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন?

তিতুমীর হাফেজ নেয়ামত উল্লাহর প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন।

৪।  তিতুমীরের বাড়ির লোকজন কেন অবাক হয়েছিল?

দশ-বারো দিন ধরে তিতুমীরকে নির্দ্বিধায় তেতো ওষুধ খেতে দেখে তাঁর বাড়ির লোকজন অবাক হয়েছিল।

৫।  তিতুমীরের সেনাবাহিনী কেমন ছিল?

স্বাধীনপ্রিয় তিতুমীরের মাত্র চার-পাঁচ হাজার সৈনিক ছিল। তাঁর কামান, গোলাবারুদ, বন্দুক এসব কিছুই ছিল না। তবে তাঁদের মনে ছিল পরাধীন দেশকে স্বাধীন করার অমিত তেজ।

৬।  কর্নেল স্টুয়ার্ডের নেতৃত্বাধীন বাহিনী কেমন ছিল?

কর্নেল স্টুয়ার্ডের নেতৃত্বাধীন বাহিনীতে ছিল অনেক সেনা আর গোলন্দাজ। প্রশিক্ষত এসব সৈনিকের পাশাপাশি তার কাছে ছিল অজস্র গোলাবারুদ।