নবি-রাসুল

  পাঠ ৩

নবি-রাসুল

আল্লাহ যাদের কাছে বাণী প্রেরণ করেন ও তাঁর দ্বীন প্রচার করার জন্য মনোনীত করেন, তাঁদের নবি-রাসুল বলে। মহান আল্লাহ মানুষের হেদায়াতের জন্য পৃথিবীতে অনেক নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন।

নবি-রাসুলগণ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা। তাঁরা ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, নিষ্পাপ ও বুদ্ধিসম্পন্ন। তারা সর্বদা নেক ও ভালো কাজ করতেন। অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকতেন। তারা উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন।

নবি-রাসুলগণ ছিলেন মানুষের জন্য আদর্শ শিক্ষক। তাঁরা নিঃস্বার্থভাবে মানুষের কল্যাণ সাধন করেছেন। সত্যের প্রচার ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য। তাঁরা যা বলেছেন ও করেছেন সবই আল্লাহর নির্দেশে। নিজ খেয়াল খুশী মতো অথবা স্বীয় স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাঁরা কখনো কোনো কিছু করেননি। আমরা সকল নবি-রাসুলকে বিশ্বাস, সম্মান ও শ্রদ্ধা করি।

নবি-রাসুলগণ আল্লাহর নিকট থেকে প্রাপ্ত অহির মাধ্যমে তাঁরা জ্ঞান লাভ করতেন। অহি মানে আল্লাহর বাণী। যাঁদের নিকট আসমানি কিতাব এসেছে, তাঁরা হলেন রাসুল। যাঁদের নিকট আসমানি কিতাব আসেনি, তাঁরা হলেন নবি।

এই পৃথিবীতে প্রথম মানুষ ও প্রথম নবি হলেন হযরত আদম (আ)। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে নিজেই মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।

আর শেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হলেন হযরত মুহাম্মদ (স)। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিল এবং রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার পবিত্র মক্কা নগরীতে বিখ্যাত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। বিদায় হজের পরে তিনি ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে এবং হিজরি একাদশ সালের ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে মদিনায় ইন্তেকাল করেন।

তিনি সবসময় ভালো ভালো কাজ করতেন, ভালো ভালো কথা বলতেন, মানুষকে ভালো কাজের উপদেশ দিতেন। তিনি মানুষের বিপদে আপদে সাহায্য করতেন। তিনি সবসময় সত্য কথা বলতেন ও কথা দিয়ে কথা রাখতেন। সবাই তাঁকে বিশ্বাস করত। একারণে সবাই তাঁকে ‘আল আমিন’ বলে ডাকত। ‘আল আমিন’ এর অর্থ পরম বিশ্বস্ত।

হযরত মুহাম্মদ (স) এর বয়স যখন চল্লিশ বছরের কাছাকাছি তখন তিনি ব্যকুল হয়ে উঠেন। এসময়ে তিনি জাবালে নূরের হেরা গুহায় আল্লাহ তায়ালার ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। অবশেষে রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতা জিবরাইল (আ) এর মাধ্যমে তাঁর নিকট কুরআন মজিদের সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাজিল করেন। এটাই হলো হযরত মুহাম্মদ (স) এর চল্লিশ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ।

নবুয়ত লাভের পর দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে হযরত মুহাম্মদ (স) এর নিকট এই বাণীসমূহ পর্যায়ক্রমে অবতীর্ণ হয়েছিল। কিছু বাণী মক্কায় এবং কিছু বাণী মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছিল।