সিংহ বনের রাজা। একদিন দুপুরবেলা রাজামশাই একটা গাছের নিচে শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। ঐ গাছের গর্তে একটা ছোট ইঁদুর বাস করতো। সে গর্তের বাইরে এসে সিংহের গায়ের উপর দিয়ে খেলে বেড়াতে লাগলো। সিংহের খুব অস্বস্তি হতে লাগলো। সে নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। ইঁদুর মজা পেয়ে তার কানে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো। এবার সিংহের ঘুম ভেঙ্গে গেল। সে এক থাবায় ইঁদুর বাচ্চাকে ধরে ফেললো। রাগে সিংহ গর্জন করতে লাগলো। ভয়ে ইঁদুরের প্রাণ যায় আর কি। সে দুই হাত জোড় করে নম্রভাবে বললো “মহারাজ, আমার খুব ভুল হয়ে গেছে। আমায় ক্ষমা করুন। আপনি জঙ্গলের দয়ালু রাজা। আজ যদি আমায় দয়া করে ছেড়ে দেন, তবে ভবিষ্যতে কোন না কোন ভাবে আমি আপনাকে সাহায্য করবো প্রভু।”
ইঁদুরের কথা শুনে সিংহতো হেসেই অস্থির। সে বললো “তুমি হলে এতটুকু জীব। আমার মত প্রতাপশালী রাজাকে তুমি কেমন করে সাহায্য করবে বাছা? যাই হোক আমি দয়া করে আজ তোমায় ছেড়ে দিলাম।”
বেশ কিছুদিন পর, একদিন রাত্রে সিংহের গর্জন শুনে ইঁদুর গর্ত থেকে বেরিয়ে এলো। সে দেখলো বনের রাজা শিকারীদের পাতা ফাঁদে আটকে পড়ে ছটফট করছে। কিছুতেই জাল থেকে বেরুতে পারছে না।
ছোট ইঁদুর তখন তাকে শান্তনা দিয়ে বললো - “মহারাজ, আপনি ঘাবড়াবেন না। আমি আপনাকে এই ফাঁদ থেকে মুক্ত করছি।” এই না বলে সে তার ধারালো দাঁত দিয়ে জাল কুটকুট করে কেটে ফেললো। ধীরে ধীরে সিংহ মশাই সেই জালের ভিতর থেকে বেরিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।
সিংহ বুঝতে পারলো ছোট জীব হলেও তাকে অবজ্ঞা করা উচিত নয়। সে ইঁদুরকে ধন্যবাদ দিয়ে বনের পথে অদৃশ্য হয়ে গেল।
ইঁদুর ভাবলো সিংহকে জীবন দান করে সে ঋণমুক্ত হল।