এক মুদির দোকানে অনেক ইঁদুর বাস করতো। প্রতিদিন রাত্রে তারা শস্যদানা, রুটি, বিস্কুট, জ্যাম, চিজ ও শুকনো যা পেত সব খেয়ে ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে নষ্ট করতো।
দোকানের মালিক ইঁদুরদের দৌরাত্মে অস্থির হয়ে পড়লো। দোকানের জিনিস এইভাবে দিনের পর দিন নষ্ট হওয়ায় তার ব্যবসায় লোকসান হতে লাগলো। সে ভাবলো “এই সর্বনাশা ইঁদুরদের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাকে কোনো উপায় বের করতেই হবে; না হলে এরা আমায় শেষ করে দেবে।”
অনেক ভেবে সে একটা বড় মোটা বেড়ালকে দোকানে নিয়ে এলো ও পুষতে লাগলো। ফলে ইঁদুরদের একাধিপত্য কমতে শুরু করলো। তারা বেড়ালের ভয়ে যখন তখন এদিক ওদিক স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছিল না। কারণ প্রতিদিনই বেড়াল ভায়া দু-চারটে করে ইঁদুর ধরে মারতে লাগলো।
ইঁদুরেরা খুবই চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একটা সভা ডেকে সেখানে আলোচনায় বসলো। সবাই বলতে লাগলো “যে কোনো উপায়ে বেড়ালের হাত থেকে আমাদের মুক্তি পেতেই হবে।” কিন্তু কী উপায়ে সেটা সম্ভব হবে কেউই তার কোনো উত্তর দিতে পারলো না।
তখন এক চালাক ইঁদুর উঠে দাঁড়িয়ে বললো “বন্ধুগণ, বেড়াল খুব দ্রুত ও নিঃশব্দে চলাফেরা করে বলে আমরা বোঝার আগেই সে আমাদের আক্রমণ করে। তাই বেড়ালের গলায় একটা ঘন্টা বাধা দরকার বলে আমি মনে করি।”
অন্য এক ইঁদুর বললো “ভাই তুমি ঠিকই বলেছ। ঘন্টার আওয়াজে আমরা বুঝতে পারবো বেড়াল আসছে এবং সেই বুঝে আমরা লুকিয়ে পড়বো কি বলো?”
সব ইঁদুর এই সমাধান মেনে নিয়ে আনন্দে হাততালি দিয়ে চিৎকার করে উঠলো হু-র-রে।
তখন একজন বুড়ো ইঁদুর আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়িয়ে বললো “ভাইসব, উল্লাস বন্ধ করো। তোমরা আমায় বলতে পারো সাহস করে বেড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধতে কে যাবে?”
মুহূর্তের মধ্যে সবাই চুপ। কেউই সাহস করে বলতে পারলো না যে “আমি যাব বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধতে।”