ইবাদত

 পাঠ ৪

ইবাদত

‘ইবাদত’ আরবি শব্দ। ‘ইবাদত’ শব্দের অর্থ আনুগত্য, দাসত্ব, বন্দেগী ইত্যাদি। আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূলুল্লাহ (স) প্রদর্শিত পথে জীবন পরিচালিত করাকেই ইবাদত বলে।

সালাত, সাওম, যাকাত, হজ, ইত্যাদি আমরা যেমন ইবাদত হিসেবে পালন করে থাকে তেমনি জীবনের প্রতিটি কাজ ইসলামী বিধি বিধান মোতাবেক সম্পন্ন করা ইবাদতের অংশ। মহান আল্লাহ সকল জিনিস মানুষের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর জিন ও মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত বা দাসত্ব স্বীকার করার জন্য।

আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে বলেন, “আমি সৃষ্টি করেছি জ্বীন এবং মানুষকে এজন্য যে, তারা শুধু আমারই ইবাদত করবে” ।

(সূরা আয-যারিয়াত, আয়াতঃ ৫৬)

ইবাদত করলে আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হন। এতে দুনিয়ার জীবন সুখের হয় পরকালে পরম শান্তিময় স্থান জান্নাত লাভ করা যায়।
ইসলাম পাঁচটি রুকুনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। রুকন মানে খুঁটি। পাঁচটি রুকন হলোঃ

১। ইমান
২। সালাত
৩। সাওম
৪। হজ
৫। যাকাত

ইমানের পরেই সালাতের স্থান। সালাত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। জান্নাত লাভ করতে হলে নিয়মিত সালাত আদায় করতে হবে।
মহানবি (স) বলেছেন, “সালাত জান্নাতের চাবিকাঠি” ।

- তিরমিজি, ইবনেমাজা, আবুদাউদ।

দিনে-রাতে মোট পাঁচবার সালাত আদায় করতে হয়। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত হলো-

১। ফজর
২। যোহর
৩। আসর
৪। মাগরিব
৫। ইশা

ছেলে মেয়ে সাত বছর হলে তাদের দ্বারা সালাত আদায় করানো পিতা মাতার উপর ওয়াজিব। সালাত কারো জন্য মাফ নাই। কোন অবস্থাতেই সালাত ছাড়া যায় না। রোগী, অন্ধ, খোঁড়া, বোবা, বধির যে যে অবস্থায় আছে তাকে সেই অবস্থাতেই সালাত আদায় করতে হবে।

আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজ কর্মই ইবাদত, যদি সেই কাজগুলি আল্লাহ তায়ালার হুকুম ও তাঁর রাসুল (সঃ) এর নির্দেশিত পথ অনুযায়ী হয়। যেমনঃ আমরা খেতে বসলে যদি ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া শুরু করি তবে যতক্ষণ খাওয়ার মধ্যে থাকবো ততক্ষন আল্লাহর রহমত পেতে থাকবো। এটা ইবাদত। পড়ার সময় যদি ‘বিসমিল্লাহ’ বলে পড়া শুরু করি তবে ততক্ষণ পর্যন্ত লেখাপড়া করব ততক্ষণই তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে। স্কুলে যাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বলে শুরু করলে সকল বিপদ-আপদ থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করবেন। একজন অন্ধলোক রাস্তা পার হতে পারছে না তাকে হাত ধরে রাস্তা পার করে দিলে তাও আল্লাহর ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে। এমনকি ঘুমানোর আগে পাক পবিত্র হয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে ঘুমালে নিদ্রার সময়টুকু আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে গণ্য হবে।

তাই আমরা সর্বদা আন্তরিকতার সাথে ইবাদত পালন করব। আমাদের জীবন সর্বক্ষণই যাতে আল্লাহর ইবাদতে গণ্য হয় সে চেষ্টা অব্যাহত রাখব।